৪ লাখ টাকার ওষুধ ৫১ লাখ টাকায় ক্রয়, ১০১ টাকার ইনজেকশন ১২৯৯ টাকায় ক্রয়
দুর্নীতির অভিযোগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজের অপসার দাবিতে হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে নিপীড়িত নাগরিক সমাজ। এছাড়া কুমিল্লার ছাত্র জনতা ও সচেতন এলাকাবাসীর ব্যানারেও পরিচালক, তার প্রধান সহকারী দেলোয়ার এবং ড্যাব কুমিল্লা মহানগর সভাপতি এমএম হাসানের অপসারণ দাবি করেন তারা।
২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে ঘন্টা ব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি কুমিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঔষধ কেনাকাটায় কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক মাসুদ পারভেজ, কুমিল্লা মহানগর ড্যাব সভাপতি এমএম হাসানসহ কয়েকজন চিকিৎসক নেতার বিরুদ্ধে। এছাড়া দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়েছে পরিচালকের প্রধান সহকারী দেলোয়ার হোসেনও। এছাড়া দীর্ঘদিন হাসপাতালে অনিয়ম ও দালালের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে বারবার প্রতিবাদ করে আসলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বরং তাদের বিরুদ্ধে পরপর দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। তাই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম জনবান্ধব করার লক্ষ্যে বর্তমান পরিচালক ও দুর্নীতিগ্রস্ত সকল চিকিৎসক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের অপসারণ করা জরুরি।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টি কুমিল্লা মহানগর যুগ্ম সমন্বয়কারী মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান, এবি পার্টি কুমিল্লা মহানগরের আহবায়ক গোলাম মোঃ সামদানীসহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনিয়মের ভুক্তভোগী ও সচেতন এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঔষধ কেনাকাটায় হাসপাতালের পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ থেকে জানা গেছে, হাসপাতালে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ওষুধপত্র (এমএসআর) গ্রুপে পাঁচ কোটি টাকার ওষুধপত্র কেনা হয়। চাহিদাপত্রের ৩ নম্বর ক্রমিক অনুযায়ী ইনজেকশন পেনটোথাল সোডিয়াম এক গ্রাম (পানিসহ) চার হাজার ভায়েল ক্রয় করা হয়েছে। যার প্রতি ভায়েলের এমআরপি ১০১ টাকা। কিন্তু প্রতি ভায়েল ক্রয় করা হয়েছে ১২৯৯ টাকা দরে। এক আইটেমে সরকারের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এই ওষুধ শুধুমাত্র অ্যানেসথেসিয়া বিভাগে ব্যবহার করা হয়। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী ওষুধপত্র গ্রুপের প্রতিটি আইটেম এমআরপি এর মধ্যে ক্রয় করার সরকারি বিধান রয়েছে। ইনঃ পেনটোথাল সোডিয়াম (পানিসহ) ১ গ্রাম ৪০০০ ভায়েল ক্রয় করা হয়েছে ৫১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায়। এক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের মূল্য ধরা হয়েছে ১২৯৯ টাকা। অথচ খুচরা বাজার দরেই এর প্রকৃত মূল্য হলো ১০১ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৪ লাখ ৪ হাজার টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে ৫১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায়।
তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোঃ মাসুদ পারভেজ জানান, 'এটি প্রিন্টিং মিসটেক।'
ক্যাটেগরি:
বৃহত্তর কুমিল্লা
ট্যাগ:
বৃহত্তর কুমিল্লা
আন্তর্জাতিক
রাজনীতি