প্রতিবেদক: Raisul Islam Shohag | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 11 Nov 2025, 8:32 AM
মানুষের ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত হলেন ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুল গফুর ভূঁইয়া
সাইফুল ইসলাম, নাঙ্গলকোট
কুমিল্লা- ১০ (নাঙ্গলকোট ও লালমাই) আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী মো. আব্দুল গফুর ভূঁইয়া নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের ফুলেল শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসায় সিক্ত হলেন। গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় লালমাই দক্ষিণ বাজার থেকে তিনি কয়েক‘শ মাইক্রোবাস ও শত শত মোটর সাইকেল শোভাযাত্রার বহর নিয়ে ব্যাপক নির্বাচনী শোডাউন শুরু করেন। এসময় তিনি লালমাইয়ের দত্তপুর, বাগমারা বাজার, সৈয়দপুর, মেহেরকুল, দৌলতপুর, শিকারপুর, হাজতখোলা, বড়তুলা, দুর্গাপুর, আমুয়া, গোলাচৌ, কলমিয়া, ভুলইন, ভুশ্চি, জামুয়া, গোসাই পুষ্কুনি, গৈয়ারভাঙা, বাংলাবাজার, বেলঘর এবং নাঙ্গলকোটের যুক্তিখোলা, বাঙ্গড্ডা, মাহিনী, ঝাটিয়াপাড়া, মৌকরা, ঢালুয়া, মন্নারা, বক্সগঞ্জ, দৌলখাঁড় হয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা সদরের শহীদ মিনার সংলগ্ন মাঠে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে নির্বাচনী শোডাউন শেষ করেন। এর আগে তিনি লালমাই, বাগমারা, ভুশ্চি, বাঙ্গড্ডা, মাহিনী, ঝাটিয়াপাড়, মৌকরা, ঢালুয়া, মন্নারা, বক্সগঞ্জ এবং দৌলখাঁড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন। বিএনপির প্রার্থী গফুর ভূঁইয়াকে স্বাগত জানাতে সড়ক পথের মোড়ে মোড়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে ধানের শীষের পক্ষে শ্লোগান দেন।
কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-লালমাই) সংসদীয় আসনে বিএনপি থেকে মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বিভিন্ন পথসভা এবং নাঙ্গলকোট হ্যালিপ্যাড মাঠে বক্তব্যে বলেছেন, আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনারা আমাকে যে আমানত দিয়েছেন। সেটা রক্ষা করার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করবো। আমি কোন নেতা নই। আজকে ১৮বছর আমার কোন পদ-পদবী নেই। আমার লোকজন হচ্ছে, আলেম ওলামা, বাস, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক, কৃষক হতে শুরু করে সাধারণ জনগণ। আপনি বড় নেতা এ পরিচয় দেবেন না। আমি জনগণের মনোনয়ন নিয়ে জনগণের কাছে এসেছি। আমি জনগণের জন্য কাজ করবো। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টা কাজ করবো। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা চাই। আমাদের মধ্যে সততা থাকতে হবে। অহংকার এবং অহমিকা যাতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমি অন্যায় করবো না এবং কাউকে অন্যায় করতে দেবো না। বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ, যুবদল, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাদের প্রত্যেক ভোটার মা-বোন এবং ভাইদের ঘরে-ঘরে গিয়ে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইতে হবে। বিজয় সু-নিশ্চিত বলে ঘরে বসে থাকা যাবে না। ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে যেতে হবে। আওয়ামীলীগের মধ্যে অনেকে ভালো ছিল। তাদেরকে ধানের শীষের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহবান জানাতে হবে। আপনাদের বিশ্বাস করে নাঙ্গলকোট আপনাদের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। আমি লালমাইয়ে প্রতিটি এলাকায় রাত্রি যাপন করে ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইবো। আমাদের দলীয় মনোনয়ন দেয়ার আগে আমাদের নেতা তারেক রহমান সব সম্ভাব্য প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে দলীয় কার্যালয়ে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন। ওনার বক্তব্যে প্রার্থীদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আমরা বলেছি, যে মনোনয়ন পাবে আমরা তার পক্ষে কাজ করবো। সেখান থেকে বের হয়ে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া স্বাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমার নেতা যে কথা বলেছেন, আমার আর কোন কথা থাকতে পারে না। দল যাকে মনোনয়ন প্রদান করবেন। আমি তার পক্ষে কাজ করবো। অথচ তার লোকজন এখন আমার নেতা তারেক জিয়ার বিপক্ষ নিয়েছেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর আমি রাজনীতি করছি। মানুষের সাথে আমার একটি সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। এটা মুদ্রার এপিঠ এবং ওপিঠ। আমি সরকারি এবং বিরোধী দলে ছিলাম। নাঙ্গলকোটের মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছি। ২০০৭ সালের পর দেশী-বিদেশী যড়যন্ত্র এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্তা ‘‘র’’এর যড়যন্ত্র ছিল। যার ফলে ১/১১ হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে হটিয়ে সেনা সমর্থিত সরকার ক্ষমতা দখল করে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নেওয়া হয়েছে। তারেক রহমান লন্ডনে নির্বাসনে ছিলেন। তিনি এখনো লন্ডন থেকে আসতে পারেনি। তিনি লন্ডন থেকে দলকে সু-সংগঠিত করেছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, যিনি প্রার্থী হবেন, তার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্ক, জনগণের সমস্যা সম্পর্কে জানা এবং জনগণের সাথে সম্পর্ক থাকতে হবে। ২০২৫ সালের ৫ আগষ্ট বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। আমরা ২০২২ সালের ৩১ আগষ্ট নাঙ্গলকোটকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছি। আমরা বাঘের এবং সিংয়ের মত ঢাকা-চট্রগ্রাম রোডমার্চে অংশগ্রহণ করেছি।
তার গাড়ি বহরে উপস্থিত ছিলেন, নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হামিদুল হক ভূঁইয়া, লালমাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ করিম, নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলী আক্কাছ ও সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম সায়েম মজুমদার শিপু, মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সাবেক সহ-সভাপতি শোয়ায়েব খন্দকার, পৌরসভা বিএনপি সাবেক আহবায়ক আনোয়ার হোসেন মুকুল, উপজেলা যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম ছুপু, সেলিম জাহাঙ্গীর মন্টু, ছালেহ আহম্মদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবদ দল আহবায়ক খোরশেদ আলম, সদস্য সচিব আজিম উদ্দিন মাকসুদ, ছাত্রদল নেতা শহীদুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, মাসুদ আলম প্রমুখ। এসময় লালমাই এবং নাঙ্গলকোট উপজেলা এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ অঙ্গসংগঠনের বিপুর সংখ্যক নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনগন উপস্থিত ছিলেন। নাঙ্গলকোট শহীদ মিনার সংলগ্ন মাঠে আব্দুল গফুর ভূঁইয়াকে উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি,যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত করেন।
আব্দুল গফুর ভূঁইয়া আরো বলেন, আজকে ৫ হাজার মোটরসাইকেল, ২/৩শ মাইক্রোবাস, পিকআপভ্যান নিয়ে মোটর শোভাযাত্রার বিশাল শোভাযাত্রা নিয়ে যে শোডাউন করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ। আপনাদের উচিলায় আমি বেঁচে আছি। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে অবৈধ উপার্জন করবো না। নিরপরাধীকে অপরাধী বানাবো না। ২৪ঘন্টার মধ্যে ১৮ঘন্টা নাঙ্গলকোট এবং লালমাইয়ের উন্নয়নে কাজ করবো। দুই উপজেলাকে আদর্শ উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো। মদ, জুয়া, অসামাজিক কার্যকলাপ এবং কোন সিন্ডিকেট থাকবে না। টি আর এবং কাবিখার কাজ না করে বিল উত্তোলন করবো না। মসজিদ এবং মক্তবের ভূয়া কমিটি করে কোন বিল উত্তোলন করবো না। আমাকে দিয়ে কেউ কোন অবৈধ কাজ করতে পারবে না। আমি পরিবার এবং নিজের জন্য কিছু করবো না। সাধারণ জনগণের জন্য কাজ করবো। কুমিল্লা-৬ আসনে আমি কাজ করবো। মনিরুল হক চৌধুরীও কুমিল্লা-১০ আসনে কাজ করবেন। লালমাইয়ের ভুশ্চি ও বাগমারায় মনিরুল হক চৌধুরীকে নিয়ে আমরা দু‘টি জনসভা করবো। মনিরুরল হক চৌধুরী এবং আমি বড় ভাই এবং ছোট ভাই হিসেবে কাজ করবো। অর্থ এবং প্রাচুর্যের মধ্যে শান্তি নেই। আমি মরে গেলে মানুষ ভূলে যাবে। কিন্তু কর্মের মাধ্যমে আমি বেঁচে থাকবো। রাজনীতি হচ্ছে সেবার মাধ্যম। সেবার মাধ্যমে মানুষের নিকট বেঁচে থাকবো। মেধা-প্রজ্ঞা দিয়ে রাজনীতি করতে হবে। যাদের মেধা-প্রজ্ঞা আছে তারা আমার সাথে রাজনীতি করছে। ২০২৫ সালের জুলাই-আগষ্টে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে নাঙ্গলকোটের ৩জন শহীদ হয়েছেন। একজন সিংগাপুরে চিকিৎসাধীন আছেন। অন্য একজন গুরুতর আহত অবস্থায় এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ৫০জন আহত জুলাইযোদ্ধা রয়েছে। আমরা তাদেরকে সম্মাননা দিয়েছি। কেন্দ্রীয়ও জেলা নেতাদের সাথে তাদের পরিচিত করেছি।
২০০৮ সালে মোবাশ্বের ছোট ভাই বড় ভাই হয়ে গেছেন। ২০০৮ সালে মোবাশ্বের মনোনয়ন পাবে এটা মানুষ আশা করেনি। বর্তমানে মোবাশ্বেরের সাথে হাতেগোনা ২/১ জন নেতা/কর্মী আছে। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বিপদগামী হবেন না। জনগণের ক্ষতি হয়। এমন কিছু করবেন না। আমরা দরজা আপনাদের জন্য খোলা রয়েছে। আশা করছি আজকে বা কালকের মধ্যে আমাদের সাথে মিলে ধানের শীষের বিজয়ে কাজ করবেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা বলেছেন, জেলায়ও এতবড় সম্মেলন হয় না। নাঙ্গলকোটে যে সম্মেলন হয়েছে। আমি গত ১৭/১৮বছর পদ-পদবি ছাড়া রাজনীতি করেছি। আমার সাথে যারা আছেন মোবাশ্বের তাদেরকে পদ ও টাকা দিয়েও নিতে পারেনি। অথচ সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সম্মানিত হয়েছেন।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর
হাজী ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেন, কুমিল্লার তরুণ প্রজন্ম তাঁকে বিজ...
মাহফুজ নান্টুকুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াসিনকে ধানের শীষের মনোনয়ন দেন। কুমিল্লার তরুণ...
বুড়িচংয়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠি...
কাজী খোরশেদ আলমকুমিল্লার বুড়িচংয়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রব...
কুমিল্লায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগে...
আয়েশা আক্তারকুমিল্লা জেলাজুড়ে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের ২০...
বিদেশে পলাতক কুমিল্লার নেতাদের উস্কানিতে কপাল পুড়ছে কর্মীদে...
নিজস্ব প্রতিবেদকপতিত আওয়ামী লীগ সরকারের কুমিল্লার একসমের দাপুটে নেতারা বর্তমানে দেশ থেকে পালিয়ে লুটপ...
মুরাদনগরে বিদ্যালয় পরিদর্শনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্...
বেলাল উদ্দিন আহাম্মদশিক্ষার মান উন্নয়ন, গুণগত মান নিশ্চিত করণ ও মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ গঠনের লক্ষ্য...
শেখ হাসিনাকে জিয়াউর রহমানের অর্ধাঙ্গিনী বলায় তিতাসে বিএনপি...
নাজমুল করিম ফারুক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী সম্বোধন করায় তিত...