
প্রতিবেদক: Raisul Islam Shohag | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 6 Oct 2025, 11:40 AM

অপচয় হওয়া সরকারি অর্থের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বুড়িচংয়ে এ্ই সেতু

কাজী খোরশেদ আলম
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল গ্রামে ঘুঙ্গুর নদীর উপর নির্মিত এক অদ্ভুত সেতু ২০ বছর ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। ২০০৫ সালে তৎকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপনের প্রভাব খাটিয়ে তার বাড়ির পাশেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দুই দশক পেরিয়ে গেলেও সেতুটি দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করেনি।
ফলে প্রকল্পে বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও গ্রামীণ মানুষের কোনো উপকারে আসেনি এ সেতু। বরং এটি এখন এলাকাবাসীর জন্য জনদুর্ভোগ ও ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাস্তা থেকে প্রায় ১৫ ফুট উঁচুতে নির্মিত এই সেতুর একপাশে সিঁড়ি থাকলেও অপর প্রান্তে ওঠানামার কোনো সুযোগ নেই। ফলে সেতুটি ব্যবহার করতে হলে স্থানীয়দের বস্তা বা অন্যান্য অস্থায়ী উপায়ের সাহায্য নিতে হয়। তাই স্থানীয়রা একে “অদ্ভুত সেতু” নামে ডাকেন।
সেতুটি নির্মাণের সময় বলা হয়েছিল, নদী পারাপারে এটি হবে স্থানীয় জনগণের জন্য বড় সহায়ক। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই সেতুটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। অকার্যকর এ সেতু নিয়ে স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় কৃষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম এই সেতু হলে বাজারে যাতায়াত সহজ হবে। ফসল মাঠ থেকে সরাসরি গাড়িতে তোলা যাবে। কিন্তু ২০ বছরেও কোনো গাড়ি চলল না। আমাদের কষ্ট যেমন ছিল, তেমনি রয়ে গেছে।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হানিফ জানান, “এলাকায় শাকসবজি ও ফসল বাজারে নিতে অনেকটা ঘুরে যেতে হয়। এতে করে অনেক ঝামেলা হয়। সেতুটা যদি সংস্কার করে দুই পাশে সংযোগ সড়ক তৈরি করা যায়, তাহলে পুরো গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কোনো ধরনের সমীক্ষা ও সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই বিপুল অর্থ ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। যার ফলে ২০ বছরেও এটির কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। বরং বর্তমানে এটি অপচয় হওয়া সরকারি অর্থের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনোও যদি সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়, তবে এটি এলাকাবাসীর জন্য এক বিশাল সুফল বয়ে আনবে। এতে শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন। গ্রামীণ মানুষের দাবি, সরকারের উচিত দ্রুত সেতুটি সংস্কার ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া। তা না হলে অকার্যকর এই সেতু আরও বহু বছর ধরে স্থানীয়দের দুর্ভোগের কারণ হয়ে থাকবে।
বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ অক্ষর জানান, “সেতুটি নির্মাণের সময় স্থানীয়রা সংযোগ সড়কের জায়গা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে জায়গা না দেওয়ায় সংযোগ সড়ক আর নির্মাণ সম্ভব হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে স্থানীয়রা যদি জায়গা দেন, তবে নতুন করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারের মাধ্যমে সেতুটি চালু করা সম্ভব। এতে এলাকাবাসীর উপকার হবে।”
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর

নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্...
এমরান হোসেন বাপ্পিনিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনন্যভূমিক...

লালমাই উপজেলায় লাল সবুজের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
মাসুদ রানা, কুমিল্লারবিবার (৫ অক্টোবর) লালমাই উপজেলা পরিষদে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের...

হোমনায় ৬ দফা দাবীতে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি পালন,টিকাস...
হোমনা( কুমিল্লা) প্রতিনিধিকুমিল্লার হোমনা উপজেলায় বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের স্বাস...

ব্রাহ্মণপাড়ায় নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযা...
মো. আনোয়ারুল ইসলাম“শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুমিল্লার ব্রা...

বাঞ্ছারামপুরে পুরোনো ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি, ঝুঁকিতে জনস্...
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে অবৈধভাবে পুরাতন ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত, মো. বাবু হত্যা মামলার পল...
