প্রতিবেদক: Raisul Islam Shohag | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 24 Oct 2025, 12:02 AM
৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্প বেশি উচ্চতা নিয়ে সওজ-পাউবোর টানাপোড়নে ঝুঁকিতে যানবাহন ও পথচারী
সুমন সরকার, মুরাদনগর
কুমিল্লার মুরাদনগরে গোমতী নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু নির্মাণ প্রকল্প এখন অনিশ্চয়তার মুখে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আপত্তির কারণে প্রায় ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার বরাদ্দ স্থগিত হয়ে আছে। এতে করে মুরাদনগর সদর ও ভুবনঘর এলাকায় মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পুরোপুরি থেমে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে মুরাদনগর উপজেলার মুরাদনগর হয়ে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। তাছাড়া এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এ ব্রীজ নির্মাণের।
সেতুটি কতটা উঁচু হবে এ নিয়ে টানাপোড়েনে দুটি সরকারি দফতর। পাউবো দাবি করছে, নতুন সেতুটি বর্তমান বেইলি সেতুর চেয়ে অন্তত ২০ ফুট উঁচুতে নির্মাণ করতে হবে, যাতে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয়। অন্যদিকে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, গোমতীর অন্যান্য স্থানে স্থাপিত সেতুগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু করলেই যথেষ্ট হবে।
এই মতবিরোধের জেরে সেতুর নকশা ও ডিজাইন চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে দরপত্র আহ্বানও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই দফতরের টানাপোড়েনে গুরুত্বপূর্ণ এই অবকাঠামো প্রকল্পটি ঝুলে আছে।
বর্তমানে মুরাদনগর সদর ও ভুবনঘর এলাকায় গোমতী নদীর উপর ১৯৮৮ সালে নির্মিত একটি বেইলি সেতু। যা বর্তমানে এখন নড়বড়ে ও জীর্ণ অবস্থায়। প্রতিদিন শত শত যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পারাপার করছে। ভারী যান উঠলেই সেতু কেঁপে ওঠে, ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেইলি সেতুটি প্রশস্ত না হওয়ার কারনে প্রতিদিন যানজটের দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুতে চলাচল করে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজারো মানুষ।
২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয় ৩৪৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পে। এর আওতায় ৩৫ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণ, ৮টি পুরনো বেইলি ব্রিজের বদলে ৫টি নতুন আরসিসি গার্ডার সেতু এবং ৩টি আরসিসি কালভার্ট নির্মাণের কথা ছিল।
প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়, যার মধ্যে প্রথম দুটি প্যাকেজে কাজ চলমান থাকলেও তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পাউবোর অনুমোদন না মেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরগুলোর গাফিলতি, টালবাহানা ও সমন্বয়ের অভাবের কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন আটকে যাচ্ছে। তাদের দাবি দ্রুত সমস্যার সমাধান করে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু না হলে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাবে। যার কারণে মুরাদনগর উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, গোমতী নদীর ওপর একটি টেকসই সেতু নির্মাণ সময়ের দাবি। এটি না হলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে না। আমরা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সওজ বিভাগের কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, পাউবো যে উচ্চতা নির্ধারণ করেছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। সে পরিমাণ উচ্চতায় ডিজাইন করা সম্ভব নয়। ফলে দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার জানান, আমি এখানে এক বছর ধরে আছি, বিষয়টি আমার জানা নেই।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর
ব্রাহ্মণপাড়ায় অফিস কক্ষে দুই শিক্ষকের মারামারি সামাজিক যোগা...
ব্রাহ্মণপাড়া প্রতিনিধিকুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের চাঁন্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বি...
কুবিতে পালিত হলো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
কুবি প্রতিনিধি যথাযোগ্য মর্যাদায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পালিত হলো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।...
চৌদ্দগ্রামে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম এর কমিটি...
এমরান হোসেন বাপ্পিকুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম এর উপজেলা কমিটি গঠন ক...
বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা গ্রেফত...
নিজস্ব প্রতিবেদককুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি নাজিরা বাজার ও উপজেলা সদরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আওয়া...
হোমনায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
আবদুল হক সরকারকুমিল্লার হোমনায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধার সাথে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন...
ব্রাহ্মণপাড়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণপাড়াকুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হ...