
প্রতিবেদক: Raisul Islam Shohag | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 4 Oct 2025, 12:45 PM

ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রকৃতির অযত্নে বিলীন হচ্ছে পুষ্টিগুণে ভরপুর সবুজ নটেশাক

মো. আনোয়ারুল ইসলাম
প্রকৃতিতে অযত্নে জন্মানো অনেক শাক-সবজির মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভিটামিন, খনিজ ও নানা রোগ প্রতিরোধী উপাদান। তেমনি একটি পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ উদ্ভিদ হলো বুনো সবুজ নটেশাক। একসময় গ্রামগঞ্জের মেঠোপথ, জলাশয়ের পাড়, পরিত্যক্ত জমি কিংবা পতিত জায়গায় প্রচুর পরিমাণে দেখা যেতো এই শাক। তবে পরিবেশ দূষণ ও জনসচেতনতার অভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে উপকারী এই উদ্ভিদটি।
আমারান্থ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এই শাকের বৈজ্ঞানিক নাম অ্যামারান্থাস ভিরিডিস। অঞ্চলভেদে একে বুনো নটে, খুদুরি, খুড়িয়া, আম নটে, মারিশ, বৈলবলি, নাটা বা গাইখুরা নামেও ডাকা হয়। এটি একটি বর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ, সাধারণত বর্ষাকালে জন্মে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়। খেতেও সুস্বাদু হওয়ায় গ্রামীণ জীবন থেকে শুরু করে শহুরে বাজারেও এই শাকের চাহিদা রয়েছে।
পুষ্টি উপাদানে ভরপুর বুনো সবুজ নটেশাকে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, পটাসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এছাড়া ভিটামিন এ, সি, কে ও বি-কমপ্লেক্সের বিভিন্ন উপাদান ছাড়াও রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল, যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখে। নিয়মিত খেলে এ শাক কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হজমশক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একইসঙ্গে হৃদরোগ, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং ত্বক-চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া রক্তস্বল্পতা দূর করতে, হাড় মজবুত করতে ও গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে এই শাক কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জামাল হোসেন বলেন, সৃষ্টিকর্তার প্রতিটি সৃষ্টি একে অপরের পরিপূরক। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় প্রতিটি সৃষ্টির গুরুত্ব রয়েছে। বুনো সবুজ নটেশাকও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ। তবে এর উপস্থিতি প্রকৃতি থেকে কমে আসছে, যা দুঃখজনক।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক ডা. সোহেল রানা বলেন, বুনো সবুজ নটেশাক ভেষজ গুণসম্পন্ন একটি পুষ্টিকর উদ্ভিদ। এতে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের আধিক্য রয়েছে, যা দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে। কিন্তু সঠিক ব্যবহার ও সচেতনতার অভাবে এ শাকের আধিক্য কমে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বুনো যেকোনো উদ্ভিদ খাওয়ার আগে বা ব্যবহার করার আগে অবশ্যই সে বিষয়ে ভালোভাবে জানা উচিত। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
পরিবেশবিদদের মতে, প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাওয়া উদ্ভিদ ফেরাতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অন্যথায় মানুষ হারাবে এক মূল্যবান ভেষজ খাদ্য আর প্রকৃতি হারাবে তার পরিবেশগত ভারসাম্য
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর

বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখলা...
কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধিকুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক...

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে রাস্ট্র ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করবে-মো.আ...
আবুল কালাম আজাদআগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে।এ নির্বাচনে আমাদের সকলক...

বুড়িচংয়ে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলী নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরোচি...
কাজী খোরশেদ আলমফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বুড়িচংয়ে ব...

কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানিতে ভেসে বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্য...
নিজস্ব প্রতিবেদককুমিল্লা গোমতী নদীতে ককশীট ও কলাগাছের সাথে বেঁধে পাচারের জন্য ভাসিয়ে দেয়া বিপুল পরিম...

চান্দিনায় পারিবারিক বিরোধের জেরে হামলা ও ভাঙচুর, নারীসহ আহত...
সোহেল রানাকুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মোহনপুর গ্রামে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এক ভয়াবহ হামলা ও ভ...

তিতাসে নদী-খাল-বিল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ
নাজমুল করিম ফারুককুমিল্লার তিতাসের নদী, খাল ও বিল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ। পানি প্রবাহে...
