
প্রতিবেদক: Raisul Islam Shohag | ক্যাটেগরি: আন্তর্জাতিক | প্রকাশ: 18 Sep 2025, 8:22 PM

বিশ্ব বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটাবে এআই: ডাব্লিউটিও

এফএনএস বিদেশ :
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ২০৪০ সালের মধ্যে বাণিজ্য ব্যয় হ্রাস, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও বিশ্ব বাজারে অংশগ্রহণ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে বাণিজ্যের মূল্য প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পারে। আজ প্রকাশিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) একটি নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। ‘সকলের সুবিধার জন্য বাণিজ্য এবং এআই নিয়ে কাজ করা’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে, প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এআই এর বিকাশ এবং প্রয়োগের ফলে বিশ্বব্যাপী জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটবে, যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন প্রকাশ করার সময় ডাব্লিউটিও এর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়ালা বলেন, “এআই ইতোমধ্যে আমাদের অর্থনীতি এবং আমাদের সমাজকে পুনর্গঠন করছে। আমরা কীভাবে উৎপাদন, ব্যবহার ও বাণিজ্য করি তা রূপান্তর করার সক্ষমতা এআই-এর রয়েছে।” মহাপরিচালক বলেন, বাণিজ্য খরচ কমিয়ে এবং পণ্য ও পরিষেবার উৎপাদন পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “ডাব্লিউটিও সিমুলেশন থেকে ধারণা পাওয়া গেছে যে, ২০৪০ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বর্তমান প্রবণতার তুলনায় পণ্য ও পরিষেবার রপ্তানি প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পারে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, তাদের গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, বেসরকারি খাত ইতোমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মাধ্যমে বাস্তব বাণিজ্য-সম্পর্কিত সুবিধা দেখতে পাচ্ছে। তিনি বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারকারী প্রায় ৯০ শতাংশ সংস্থা বাণিজ্য ঝুঁকি পরিচালনা বা পদ্ধতি মেনে চলার ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নত করেছে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে প্রাপ্ত সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থনীতির মধ্যে ব্যাপকভাবে বিনিময় হবে না। তিনি উল্লেখ করেন, “আমাদের সিমুলেশনে দেখা গেছে যে, ডিজিটাল অবকাঠামো এবং এআই সুবিধা গ্রহণ করার ফলে নি¤œ আয়ের অর্থনীতিগুলি এআই থেকে প্রায় ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখতে পাবে, যেখানে উচ্চ-আয়ের দেশগুলি দুই-অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। কিন্তু ডিজিটাল এবং এআই বিভাজন সংকুচিত করলে উচ্চ-আয়ের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন না করেই নি¤œ আয়ের অর্থনীতির জিডিপি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। অন্য কথায়, অন্তর্ভুক্তি এবং সমান সমান সুবিধা অর্জন করা সম্ভব- তবে এর জন্য পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।”আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে, প্রেস ব্রিফিংকালে ডাব্লিউটিওর ডেপুটি ডিরেক্টর-জেনারেল জোহানা হিল এবং রিপোর্ট সমন্বয়কারী মার্ক বাচেটা, এমানুয়েল গ্যান এবং আঙ্কাই জু সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তারা প্রতিবেদনের মূল বৈশিষ্ট্য এবং বিশেষ দিকগুলি তুলে ধরেন। ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হিল বলেন, বাণিজ্যনীতির অনিশ্চয়তা ব্যবসায়িক আস্থা, বিনিয়োগ ও সরবরাহ শৃঙ্খলের উপর চাপ সৃষ্টি করে। অনিশ্চয়তা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য পরিবেশের সবচেয়ে বিঘœকারী শক্তিগুলির মধ্যে একটি। তিনি আরও বলেন, ‘এটি অবশ্যই বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য পরীক্ষার সময়। তবে, ডাব্লিউটিও সদস্যদের সংস্থার নিয়মকানুন অনুসারে বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতি সাড়া দেওয়া অব্যাহত রাখা অবশ্যই একটি আশাব্যঞ্জক বিষয়।’ হিল আরও বলেন, বাণিজ্য পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং ভূ-রাজনীতি, বা ভূ-অর্থনীতি, শিরোনামগুলো প্রাধান্য পাচ্ছে। আমরা নানা প্রবণতার মুখোমুখি হচ্ছি যা বিশ্ব অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভবিষ্যত পুনর্গঠন করছে। এআই অবশ্যই তাদের মধ্যে একটি।” প্রতিবেদন অনুসারে, এআই ২০৪০ সালের মধ্যে বাণিজ্য এবং জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটাতে পারে, ‘নি¤œ-মধ্যম এবং উচ্চ-আয়ের অর্থনীতির মধ্যে নীতির বিভিন্ন মাত্রা এবং প্রযুক্তিগত সংস্পর্শের’ উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ৩৪ শতাংশ থেকে ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে বলা হয়েছে যে, বাণিজ্য অর্থনীতিগুলিকে এআই-সমর্থিত কাঁচামাল, সেমিকন্ডাক্টর এবং ও অন্যান্য সরবরাহ মধ্যবর্তী ইনপুটগুলোর মতো এআই-সক্ষম পণ্যগুলিতে অ্যাক্সেস করতে সহায়ক হতে পারে। ডাব্লিউটিও রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে এই পণ্যগুলিতে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য মোট ২.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এআই এবং বাণিজ্যকে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে, কর্মীদের দক্ষতায় বিনিয়োগ করতে এবং একটি উন্মুক্ত ও পূর্বাভাসযোগ্য বাণিজ্য পরিবেশ বজায় রাখতে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির উপর এআই-এর প্রভাব বাণিজ্য এবং বাণিজ্য-সম্পর্কিত নীতিগুলির পরিকল্পনার উপর নির্ভর করবে। বাণিজ্য-সম্পর্কিত এআই চ্যালেঞ্জগুলি নানা নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। অবকাঠামো, জ্বালানি, শিক্ষা এবং সরকারি সহায়তার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিপূরক নীতিমালার বিষয়গুলি বিবেচনা করে, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত অর্থনীতিতে বৃহত্তর বৈশ্বিক অংশগ্রহণকে সমর্থন করার জন্য ডাব্লিউটিও এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা জরুরি।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়লো আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল
বিশ^কাপ বাছাইয়ে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে একই রকম ফল ছিল ব্রাজিল আর্জেন্টিনার। একটি জিতে একটি হেরে বিশে...
সুপার ফোর নিশ্চিত করলো পাকিস্তান
ছোট পুঁজি নিয়েও বড় জয় তুলে নিলো পাকিস্তান। দুবাইয়ে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৪১ রানে হারিয়েছে আন...
সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন মালাইকা
ক্যারিয়ার বা কাজের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন ও পোশাক নিয়েই বেশি সমালোচনার মুখে পড়তে হয়-এমনই অভিজ্ঞতা শেয়ার...
কল্কির সিক্যুয়েল থাকছেন না দীপিকা
ক্যারিয়ার নিয়ে সময়টা খুব ভালো যাচ্ছে না বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়–কোনের। বলিউডের আসন্ন সিনেমা ‘কল্ক...

নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে পাকিস্তান ও সৌদি আরব
এফএনএস বিদেশ : পাকিস্তান ও সৌদি আরব বুধবার একটি নতুন কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এতে...

রাজকীয় অভ্যর্থনার পর ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরটি হয়ে উঠেছে রা...
এফএনএস বিদেশ রাজকীয় জাঁকজমকপূর্ণ আতিথেয়তার পর প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বিস্তৃত আলোচনার জন্য আমন্...